দেবদাস

 

দেবদাস,

অনেকদিন পরে তোমার কাছে লিখছি । শোন , প্রথমে বলেছিলাম আমি অরক্ষনীয়া নই । কিন্তু সে ভুল আমার ভেঙ্গে গেছে । প্রথমে বড়দিদি ও মেঝদিদির পথ নির্দেশে চলতাম । কিন্তু হরিলক্ষী ও রামের সুমতি হল না । তখন ও  পথের দাবী ছেড়ে দিলাম । মামলার ফল বের হবার বৈকুন্ঠের উইল পেয়ে শ্রীকান্তের দেনা-পাওনা চুকিয়ে দিয়ে শোড়ষী হয়েও পথে নামলাম ।কারোর বোঝা হয়ে থাকতে চাইলাম না , ঠিক করলাম কোন এক মন্দিরে গিয়ে পরে থাকব । হঠাৎ আলোয় চায়ার পণ্ডিত মহাশয়ের সঙ্গে দেখা হল । তার অনুরধে চন্দ্রনাথের দেবদাসপরিণীতা হলাম হঠাৎ একদিন বিপ্রদাস এসে আমার স্বামী কে বলল আমি নাকি চরিত্রহীনা । কাশীনাথের দত্তা ছিলাম এমনকি বামুনের মেয়ে হয়েও আমি ছবি দেখেছি । তাই তোমাদের নববিধানে আমি নাকি সতি নই । কিন্তু তোমাদের কাছে আমার শেষে প্রশ্ন যে সমাজ নারীর মূল্য দিতে জানে না , এই কি তোমাদের পল্লী সমাজ ? শুভদাকে বোলো তার অনুপমকে যেন চন্দরনাথের হাতে সপে দেয় । শেষ পযন্ত ওর দর্পচূর্ণ হল । গৃহদাহ থেকে নিষ্কৃতি পেলেম না । এটাই হল অভাগীদের স্বর্গ । তোমাদের সঙ্গে যদি শেষের পরিচয় না ঘটে তাহলে দোষ দেওনা । বাল্য স্মৃতি মনে করিয়া তখন আর দুখ করি না । মহেশ না কি অনুপমার প্রেমে পড়েছে । পরেশ কেমন আছে জানি না । বিন্দুর ছেলেটার কথা মনে পরে । তোমার বৌদিকে আমার কথা বলো কেমন ?

ইতি,

বিরাজ বৌ ।

 

Abdur Rahman

Abdur Rahman